বাণিজ্যি

সাভারে বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন

সাভারে বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে এলাকার তরুণ-যুবকসহ সমাজের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। মাত্র হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে দু’তিন জোড়া কবুতর পালন শুরু করলেও অল্প দিনের ব্যবধানে অনেকেই গড়ে তুলেছেন লাখ টাকার খামার। বেকারত্ব ঘুচাতে অনেকেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কবুতরের খামার স্থাপন করে স্বাবলম্বী। ম্যাগপাই, বুডারবল, কৃষ্ণা, লক্ষ্যা, জগভিন, নান, বাগদাদী, রেইন, লালসিরাজী, সিলভার সিরাজী, জেকভিন, সাটিং, গ্রীবাজ, হোমাসহ নানা রং আর জাতের মূল্যবান কবুতর কেনা-বেচায় সপ্তাহে দু’দিন সাভার বাজারে বসে কবুতরের হাট। হাটে কবুতর খামারীদের বেশ সমাগম হয়। আর লেনদেন হয় বেশ কয়েক লাখ টাকার। সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন জয়নাবাড়ী মহল্লায় স্বচ্ছল ব্যক্তি জয়নাল আবেদীন। মত্স্য চাষ ও নার্সারির পাশাপাশি তিনি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পালন করছেন কবুতর। বাড়ীর চার তলার ছাদে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তিনি গড়ে তুলেছেন কবুতর খামার। তার খামারে রয়েছে ম্যাগপাই, বুডারবল, কৃষ্ণা, লক্ষ্যা, জগভিন, নান, বাগদাদী, রেইন, লালসিরাজী, সিলভার সিরাজী, জেকভিন, সাটিং, গ্রীবাজ, হোমাসহ নানা রং আর জাতের কবুতর। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তিনি কবুতর সংগ্রহ করেছেন। নিজ বাড়ীর ছাদে তার প্রতি জোড়া কবুতর প্রকার ভেদে ৫ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা মূল্যমানের। চার তলার ছাদে এবং পাঁচ তলায় আরামিটের টিন দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তিনি সুদৃশ্য খাঁচায় কবুতর পালন করছেন। তার খামারে রয়েছে প্রায় ২০০ জোড়া কবুতর। তিনি জানান, কবুতর পালন আশানুরূপ লাভজনক ব্যবসা। সাভার পৌর শহরের শাহীবাগ এলাকার এক তরুণের নাম আসিফ। আসিফ ৯ বছর আগে কিশোর বয়সেই শখের বশবতী হয়ে কবুতর পালন শুরু করে। শখ পূরণের স্বপ্ন থেকে আসিফ এখন অন্যদের স্বপ্ন দেখানোর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নয় বছর আগে দু’জোড়া কবুতর থেকে এখন প্রায় ৩শ’ জোড়া কবুতরে পরিণত হয়েছে। একসময় আসিফ খোপে (বাক্সে) কবুতর পালন করলেও এখন তা আধুনিক রূপ পেয়েছে। খোপ পরিণত হয়েছে বড় বড় শেডে। শেডগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে পৃথক আধুনিক কেইজ (খাঁচা)। বর্তমানে বাড়ির আঙ্গিনায় ছোট্ট উঠানেই অনেকগুলো শেড তৈরি করে তাতে মাঁচা করে কবুতর পালন করছে আসিফ। সে জানায়, কবুতর দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় তাকে প্রতি হাটেই কবুতর বিক্রি করতে হয়। কবুতর পালন করে প্রতিবছর খরচ বাদে প্রায় তিন লাখ টাকা সঞ্চয় করে আসিফ। সাভার বাসস্ট্যান্ডে উত্সব প্লাজার মালিক উদীয়মান ব্যবসায়ী ওবায়দুর রহমান অভি। তিনি নিজ মার্কেটের ছাদে গড়ে তুলেছেন পরিচ্ছন্ন কবুতর খামার। তার খামারে প্রায় ২০০ জোড়া কবুতর আছে। কবুতরগুলোর যত্ন করতে তিনি একজন কর্মীকে নিয়োগ দিয়েছেন। রাজানশন জলপাই বাগান মহল্লায় কবুতর পালন করছেন বেশ কয়েক যুবক। তাদেরই একজন জয়। জয়ের খামারে কবুতর দিন দিন বেড়ে চলেছে। দু’জোড়া দিয়ে কবুতর পালন শুরু করলেও এখন তার খামারে কবুতরের সংখ্যা শতাধিক। সাভার উপজেলা পশুসম্পদ উন্নয়ন কর্মকর্তা ডা. ফরহাদুল আলম জানালেন, সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অল্পদিনের ব্যবধানে অনেক তরুণ যুবক কবুতরের খামার করে স্বাবলম্বী। তবে এ ব্যাপারে সঠিক প্রশিক্ষণ না নিয়েই তারা কবুতরের খামার স্থাপন করায় শঙ্কার কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, অনেক খামারিই কবুতরের রানিক্ষেত রোগ সম্পর্কে অবগত না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই কবুতর খামার গড়তে উদ্যোগীদের প্রশিক্ষণ নিয়ে খামার করতে পরামর্শ দেন তিনি।

Comments

Popular posts from this blog